বিবাহ রেজিস্ট্রেশন
জুয়েল ও রুবিনামুসলিম ধর্মমতে বিয়ে করে।তাঁদের ৫ বছরের একটি মেয়ে আছে। বিয়ের ৪ বছর পররুবিনার সম্মতি না নিয়েইজুয়েল আরেকটি বিয়ে করে এবং সে রুবিনাকে দেনমোহর, ভরণ-পোষণ কিছুই দেয় না।যেহেতু তাঁদের বিয়েটা রেজিস্ট্রি করা হয় নি তাইরুবিনা মামলা করার কথাবললে জুয়েল বিয়েটা সম্পূর্ণ অস্বীকার করে এবং তাকেবাড়ি থেকে বের করেদেয়। রুবিনা বাবার বাড়িতে ফিরে আসে। তবে রুবিনা ওজুয়েলের বিয়ের কাজীরুবিনাদের পারিবারিকভাবে পরিচিত ছিল। এছাড়া তাদেরআত্মীয়-স্বজন ওপাড়া-প্রতিবেশীরা তাদের বিয়ে সম্পর্কে জানতেন। বিয়েপ্রমাণ করার জন্যরুবিনা তার বাবার সাথে একজন উকিলের কাছে যায় পরামর্শেরজন্য।
উকিল : আপনার বিয়ে কি রেজিস্ট্রেশন করা হয়েছিল ?
রুবিনা : ‘বিবাহ রেজিস্ট্রেশন কি?’ এটাইতো বুঝি না। এমন কিছু হয়েছে বলে মনে পড়ে না।
উকিল : রেজিস্ট্রেশন হচ্ছে তালিকাভূক্তি। আইনের দ্বারা নির্ধারিত তথ্যাবলীদিয়েনির্দিষ্ট ফরম পূরণ করে সরকারিভাবে বিবাহ তালিকাভূক্তি করাই হচ্ছেবিবাহরেজিস্ট্রেশন। ব্যাখ্যা: ১
রুবিনা : মুসলিম আইনে বিবাহ রেজিস্ট্রেশন সম্পর্কে কি বলা হয়েছে ?
উকিল : আপনার বিয়ে কি রেজিস্ট্রেশন করা হয়েছিল ?
রুবিনা : ‘বিবাহ রেজিস্ট্রেশন কি?’ এটাইতো বুঝি না। এমন কিছু হয়েছে বলে মনে পড়ে না।
উকিল : রেজিস্ট্রেশন হচ্ছে তালিকাভূক্তি। আইনের দ্বারা নির্ধারিত তথ্যাবলীদিয়েনির্দিষ্ট ফরম পূরণ করে সরকারিভাবে বিবাহ তালিকাভূক্তি করাই হচ্ছেবিবাহরেজিস্ট্রেশন। ব্যাখ্যা: ১
রুবিনা : মুসলিম আইনে বিবাহ রেজিস্ট্রেশন সম্পর্কে কি বলা হয়েছে ?
উকিল : মুসলিম পারিবারিক আইনে বিয়ের রেজিস্ট্রেশন একটি প্রামাণ্য দলিলহিসেবেকাজ করে। রেজিস্ট্রেশন ছাড়া বিয়ে প্রমাণ করা কঠিন। রেজিস্ট্রেশনকরা নাথাকলে মেয়েরা প্রতারিত হতে পারে। সকল বিয়ে রেজিস্ট্রেশন করাআবশ্যক।দেনমোহর, ভরণপোষণ, উত্তরাধিকার নির্ণয়, সন্তানের পিতৃত্ব ইত্যাদিক্ষেত্রেরেজিস্ট্রিকৃত কাবিননামা একটি আইনগত দলিল। বিয়ে রেজিস্ট্রেশন নাকরাশাস্তিযোগ্য অপরাধ।
ব্যাখ্যা: ২
উকিল : আপনার বিয়ের সময়ের কি কোন ছবি আছে বা বিয়ে প্রমাণ করার মত কোন তথ্য কি আপনার কাছে আছে ?
রুবিনা : হ্যাঁ, আমাদের বিয়ের অনুষ্ঠানের কিছু ছবি আছে। এছাড়া যে কাজী আমার বিয়ে পড়িয়েছেন তিনি পারিবারিকভাবে আমাদের পরিচিত।
উকিল : ছবি দিয়ে বিয়ে প্রমাণ করা সম্ভব। কিন্তু আপনার বিয়ে রেজিস্ট্রি করা উচিত ছিল। তাহলে এত সমস্যা হত না।
রুবিনা : হিন্দু ধর্মের আইনে বিয়ে রেজিস্ট্রেশন সম্পর্কে কি বলা হয়েছে ?
উকিল : হিন্দু পারিবারিক আইন অনুযায়ী হিন্দু বিয়ে রেজিস্ট্রেশনের কোনবিধাননাই। যেহেতু বাংলাদেশে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা হিন্দু পারিবারিক আইনমতেপরিচালিত হয় ফলে বৌদ্ধদের বিয়েও রেজিস্ট্রেশন করা হয় না। তবেপ্রয়োজনেনোটারী পাবলিকের মাধ্যমে হলফনামা করা যায়।
রুবিনা : খ্রিস্টান ধর্মের আইনে বিয়ে রেজিস্ট্রেশন সম্পর্কে কি বলা হয়েছে ?
উকিল : খ্রিস্টান ধর্মের আইন অনুযায়ী বিয়ে রেজিস্ট্রেশন করা বাধ্যতামূলক। ব্যাখ্যা:3
রুবিনা : বিয়ের রেজিস্ট্রেশন করা কেন প্রয়োজন ?
উকিল : বিবাহ রেজিস্ট্রেশনের গুরুত্ব পারিবারিক জীবনে অপরিসীম।রেজিস্ট্রেশনবিয়ের বর-কনে উভয়ের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। তবে বাংলাদেশেরসামাজিকপ্রেক্ষাপটে বিয়ের রেজিস্ট্রেশন অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ নারীদেরজন্য।বিবাহ সম্পর্কিত কোন জটিলতা বা প্রমাণের প্রশ্ন উঠলে এইরেজিস্ট্রেশনইপ্রমাণ পত্র হিসেবে কাজ করে।
রুবিনা : রেজিস্ট্রেশন করলে নারীরা কি সুবিধা পায় ?
উকিল : রেজিস্ট্রেশন হলে অনেকাংশে বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ হয়, কারণকাবিননামায়প্রমাণ পত্রসহ বয়স উল্লেখ করতে হয় । এছাড়া নারীর সুরক্ষায়বিয়েরনিকাহনামা বা কাবিননামা একটি সত্যতা প্রমাণের দলিল। কাবিননামা হলোমুসলিমবিয়ের ক্ষেত্রে একটি চুক্তিপত্র বা দলিল। খ্রিস্টান বিয়েরক্ষেত্রেও একইরকম। কিন্তু বাংলাদেশে হিন্দু বিয়ে রেজিস্ট্রেশন না হওয়ারকারণে অনেকহিন্দু নারী এই সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়।
রুবিনা : কখন এবং কিভাবে বিয়ের রেজিস্ট্রেশন করা যায় ?
উকিল : মুসলিম বিয়েতে সবচেয়ে ভাল হয়¾বিয়ের দিনই বিয়েটি রেজিস্ট্রিকরানো।বিয়ের অনুষ্ঠানে সকলের উপস্থিতিতে রেজিস্ট্রেশন করলে তার সামাজিকমর্যাদাওবৃদ্ধি পায়।
রুবিনা : বিয়ের দিন রেজিস্ট্রেশন করা সম্ভব না হলে কখন রেজিস্ট্রেশন করা যায় ?
উকিল : নিকাহ রেজিস্ট্রার (কাজী) নিজে বিয়ে পড়ালে বিয়ের দিনই তিনিবিয়েটিরেজিস্ট্রি করবেন। যদি কাজী নিজে বিয়ে না পড়ান বা কোন কারণেবিয়েরঅনুষ্ঠানে রেজিস্ট্রেশন করা সম্ভব না হয় তাহলে অবশ্যই ৩০ দিনেরমধ্যেনিকটস্থ কাজী অফিসে বিয়ে রেজিস্ট্রি করাতে হবে। এখানে উল্লেখ্য যে, অনেকক্ষেত্রে কাজী নিজে বিয়ে রেজিস্ট্রি না করে তার সহকারির মাধ্যমেবিয়েরেজিস্ট্রি করান। সেক্ষেত্রে রেজিস্ট্রি প্রক্রিয়া ঠিকমত হয়েছে কিনাতাভালভাবে দেখে নেয়া প্রয়োজন। ব্যাখ্যা:4
রুবিনা : বিয়ে রেজিস্ট্রেশনের সময় কাজীকে কোন কোন বিষয়ের প্রতি লক্ষ্য রাখতে হয় ?
উকিল : বিয়ে রেজিস্ট্রেশনের সময় বিয়ের কাজীর কতকগুলি বিষয় সাবধানতার সাথে খেয়াল রাখতে হয়। বিষয়গুলো হলো:
বরের বয়স কমপক্ষে ২১ এবং কনের বয়স কমপক্ষে ১৮ হয়েছে কিনা
বর ও কনের বিয়েতে পূর্ণ সম্মতি আছে কিনা
বিয়ের প্রকৃত সাক্ষী
আশু ও বিলম্বিত দেনমোহর
বিয়েতেউল্লেখিতশর্তসমূহ পূরণ হলেই কেবলমাত্র কাজী (নিকাহ রেজিষ্টার) বিয়েরেজিস্ট্রিকরবেন। তবে তিনি কাবিন নামার ১৮ নং ঘরে স্ত্রীকে তালাক প্রদানের (তালাক-ই-তৌফিজের) ক্ষমতা দেয়া হয়েছে কি না সেই বিষয়টিও গুরুত্বেরসাথে খেয়ালকরবেন।
রুবিনা : খ্রিস্টান বিয়ে কে রেজিস্ট্রেশন করান ?
উকিল : খ্রিস্টান বিয়ের ক্ষেত্রে যিনি বিয়ে সম্পাদন করবেন তিনিই বিয়ে রেজিস্ট্রেশন করবেন। ব্যাখ্যা: 5
রুবিনা : বিবাহ রেজিস্ট্রেশন করতে কত টাকার প্রয়োজন হয় ?
উকিল : মুসলিম বিয়ের ক্ষেত্রে একজন বিয়ে রেজিস্ট্রার দেনমোহরের পরিমাণেরউপরভিত্তি করে একটি বিয়ের রেজিস্ট্রেশনের ফি নির্ধারণ করে থাকেন।ধার্য্যকৃতদেনমোহরের প্রতি হাজার বা তার অংশবিশেষের জন্য ১০ টাকারেজিস্ট্রেশন ফি।তবে রেজিস্ট্রেশন ফি এর পরিমান ১০০ টাকার কম হবে না এবং৪০০০ টাকার উপরেহবে না। যেমনঃ কারো বিয়ের দেনমোহর ১০,০০০ টাকা হলে ফি হবে১০০ টাকা, ১০,৫০১ টাকা হলে ১১০ টাকা (প্রতি হাজারের অংশবিশেষের জন্যও ১০টাকা), ১১,০০০ টাকা হলেও ১১০ টাকা, দেনমোহরের পরিমান ৫০০,০০০ টাকা হলেও৪০০০ টাকা (সর্বোচ্চ পরিমান ৪০০০ টাকা) আবার দেনমোহর ১০০০ টাকা হলেও ফিদিতে হবে ১০০টাকা (যেহেতু সর্বনিম্ন পরিমান ১০০ টাকা)।
উল্লেখ্য রেজিস্ট্রেশন ফি পরিশোধের দায়িত্ব বরপক্ষের। সরকার সময়ে সময়ে প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে এই ফি পরিবর্তন ও ধার্য্য করে থাকে।
রুবিনা : বিয়ের রেজিস্ট্রেশন ফি কারা প্রদান করেন ?
উকিল : বিয়েতে বরপক্ষ রেজিস্ট্রেশন ফি প্রদান করবেন। রেজিস্ট্রেশন ফি জমাদিলেনিকাহ রেজিষ্টার একটি প্রাপ্তি রশিদ প্রদান করবেন। এখানে উল্লেখ্যমুসলিমবিয়ে রেজিস্ট্রেশনের পর নিকাহ রেজিষ্টার বাধ্যতামূলকভাবে বর ওকনেপক্ষকেবিয়ের কাবিননামার সত্যায়িত কপি প্রদান করবেন। খ্রিস্টান বিয়েরসত্যায়িতকপির জন্য যথাযথ ফি দিয়ে সত্যায়িত কপি নিতে হবে।
রুবিনা : বিবাহ রেজিস্ট্রেশনের সুফল কি কি ?
উকিল : একটি বিয়ের রেজিস্ট্রেশন করলে তার অনেক সুফল পাওয়া যায়। সুফলগুলো হলো:
ক) বিয়ের পক্ষদ্বয় বিয়ে অস্বীকার করতে পারেনা এবং পরস্পর পরস্পরের প্রতি কিছু দায়-দায়িত্ব পালনে বাধ্য হয়।
খ) স্বামী দ্বিতীয় বিয়ে করলে বা স্ত্রীর বিনা অনুমতিতে বিয়ে করলে বা করার উদ্যোগ নিলে স্ত্রী আইনগত ব্যবস্থা নিতে পারেন।
গ) স্বামীর কাছ থেকে স্ত্রী দেনমোহর ও ভরণপোষণ আদায় করতে পারেন।
ঘ) স্বামী/স্ত্রী উভয়ে উভয়ের সম্পত্তির বৈধ উত্তরাধিকার হতে পারেন।
ঙ) বিয়ের সময় দেনমোহর ধার্য্য না হলেও স্ত্রী ন্যায্য দেনমোহর আদায় করতে পারেন।
রুবিনা : বিয়ে রেজিস্ট্রেশন না করা কুফল কি কি ?
উকিল : রেজিস্ট্রেশন না করলে কুফল হিসেবে উপরে উল্লেখিত বিষয়ে স্বামীঅথবাস্ত্রী কোন পদক্ষেপ গ্রহণ বা দাবী আদায় করতে পারেন না। বিশেষ করেবিয়েরমিথ্যা কথা বলে নারীদের পাচার, শ্লীলতাহানী ইত্যাদিরূপে ব্যবহার করতেপারেকিন্তু বিয়ে রেজিস্ট্রেশন হলে এই ধরণের নারী নির্যাতন বন্ধ হবে বাঅনেককমে যাবে।
বিয়ে রেজিস্ট্রেশনের গুরুত্ব অনেক বেশি। বিয়েরদিনইরেজিস্ট্রেশন করা যুক্তিযুক্ত। যেহেতু বিয়ের লিখিত প্রমাণহচ্ছেরেজিস্ট্রেশন তাই বিয়ে সংক্রান্ত যে কোন প্রশ্নে, যে কোন সমস্যায়এরপ্রয়োজন হয়। যেহেতু শাহানার বিয়ে রেজিস্ট্রেশন করা ছিল না তাইশাহানারসাক্ষী, কাজী ও বিয়ের সময় তোলা ছবি দিয়ে উকিল আদালতে রফিকের সাথেতারবিয়ের প্রমাণ করতে পারে। কিন্তু যদি তার বিয়ে রেজিস্ট্রি করা থাকতোতাহলেতাকে এসব কিছুই প্রমাণ করতে হতো না। বিনা অনুমতিতে বিয়ে করার জন্যরফিকআইন অনুযায়ীশাস্তি ভোগ করছে। বিবাহ রেজিস্ট্রেশন না করা একটাশাস্তিযোগ্যঅপরাধ। সুতরাং এ ধরণের অপরাধ করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
সচরাচর জিজ্ঞাসা
প্রশ্ন.১. রেজিস্ট্রেশন না করা কি শাস্তিযোগ্য অপরাধ? শাস্তির পরিমাণ কি?
উত্তর.মুসলিমআইনে রেজিস্ট্রেশন না করা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। রেজিস্ট্রেশন না করলে২ বৎসরবিনাশ্রম কারাদন্ড ও ৩০০০ টাকা জরিমানা বা উভয়দন্ড হতে পারে তবেবিয়েটিবাতিল হবে না। খ্রিস্টান আইনে রেজিস্ট্রেশন বিয়ের অন্যতম অংশফলেরেজিস্ট্রেশন বাধ্যতামূলক। এছাড়া হিন্দু, বৌদ্ধদের বিয়েরেজিস্ট্রেশনেরনিয়ম এখনো চালু হয় নি।।
প্রশ্ন.২, যদি বিয়ের অনুষ্ঠানে বিয়ে রেজিস্ট্রি না হয় তাহলে কতদিনের মধ্যে বিয়ে রেজিস্ট্রি করতে হবে?
উত্তর.বিয়ের অনুষ্ঠানে বিয়ে রেজিস্ট্রেশন করা উত্তম তবে কোন কারণে তা না হলে ৩০ দিনের মধ্যে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে।
প্রশ্ন.৩.বিয়ের দেনমোহর এর পরিমাণের উপর কি রেজিস্ট্রেশন ফি ধার্য্য হয়?
উত্তর.হ্যাঁ, বিয়ের দেনমোহরের পরিমাণের উপর রেজিস্ট্রেশন ফি ধার্য্য হয়।ধার্য্যকৃতদেনমোহরের প্রতি হাজার বা তার অংশবিশেষের জন্য ১০ টাকারেজিস্ট্রেশন ফি। তবেরেজিস্ট্রেশন ফি এর পরিমান ১০০ টাকার কম হবে না এবং৪০০০ টাকার উপরে হবেনা। যেমনঃ কারো বিয়ের দেনমোহর ১০,০০০ টাকা হলে ফি হবে১০০ টাকা, ১০,৫০১টাকা হলে ১১০ টাকা (প্রতি হাজারের অংশবিশেষের জন্যও ১০টাকা), ১১,০০০ টাকাহলেও ১১০ টাকা, দেনমোহরের পরিমান ৫০০,০০০ টাকা হলেও৪০০০ টাকা (সর্বোচ্চপরিমান ৪০০০ টাকা) আবার দেনমোহর ১০০০ টাকা হলেও ফিদিতে হবে ১০০ টাকা (যেহেতু সর্বনিম্ন পরিমান ১০০ টাকা)।
উল্লেখ্য রেজিস্ট্রেশন ফি পরিশোধের দায়িত্ব বরপক্ষের। সরকার সময়ে সময়ে প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে এই ফি পরিবর্তন ও ধার্য্য করে থাকে।
প্রশ্ন. ৪.বিয়ে রেজিস্ট্রেশনের সময় নিকাহ রেজিষ্টারের দায়িত্ব কি?
উত্তর.বিয়েরেজিস্ট্রেশনের সময় বিয়ের অবশ্য পালনীয় শর্ত পূরণ হয়েছে কিনা তানিকাহরেজিষ্টার যাচাই-বাছাই করে দেখবেন যেমন: ১. বিয়েতে বর-কনের বয়সযথাক্রমে২১ ও ১৮ বছর হয়েছে কিনা (দালিলিক প্রমাণসহ), ২. উভয়ের সম্মতিআছে কিনা, ৩.দেনমোহর ধার্য্য হয়েছে কিনা, ৪. কারো কোন অধিকার খর্ব হয়েছেকিনাইত্যাদি।
তথ্যসূত্র
বাংলাদেশ বিবাহ রেজিস্ট্রেশন, ১৯৯৮, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার এর মহিলা ও শিশু বিষয়কমন্ত্রণালয়কর্তৃক, ইউনিসেফ বাংলাদেশ-এর সহায়তায় প্রকাশিত।
পারিবারিক আইনে বাংলাদেশের নারী, আইন ও সালিশ কেন্দ্র, প্রথম প্রকাশ: জুন-১৯৯৭।
মুসলিম বিবাহ ও তালাক (রেজিস্ট্রেশন) আইন, ১৯৭৪।
http://www.minlaw.gov.bd/mregistration.htm (১৪ মে ২০১০ তারিখে পর্যবেক্ষণকৃত)
বিবাহ রেজিস্ট্রেশন : ব্যাখ্যাব্যাখ্যা:১
১৯৭৪ সালের মুসলিম বিবাহ ও তালাক (রেজিস্ট্রেশন) আইন অনুযায়ী প্রতিটি বিবাহ সরকার নির্ধারিত কাজী দ্বারা রেজিস্ট্রেশন করা আবশ্যক।
বিবাহরেজিস্ট্রেশননা করা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। ১৮৭২ সালের খ্রিস্টান ম্যারেজএ্যাক্ট অনুযায়ীখ্রিস্টানদের বিয়ে রেজিস্ট্রেশন করা বাধ্যতামূলক।
খ্রিস্টান বিয়েতে রেজিস্ট্রেশন বিয়ের একটি অংশ হওয়ায় প্রায় সকল বিয়েরই রেজিস্ট্রেশন হয়ে থাকে।
ব্যাখ্যা:২
কেউ যদি বিয়ে রেজিস্ট্রেশনের বিধান লঙ্ঘন করেন তাহলে তার ২ বৎসরের বিনাশ্রম কারাদন্ড বা
৩০০০ টাকা জরিমানা বা উভয়দন্ড হতে পারে। তবে রেজিস্ট্রেশন না হলে বিয়ে বাতিল হবে না। বিয়ে রেজিস্ট্রেশনের
মাধ্যমে উভয়ের উপর কিছু দায়-দায়িত্ব বর্তায়।
ব্যাখ্যা:৩
১৮৭২সালেরখ্রিস্টান ম্যারেজ এ্যাক্ট অনুযায়ী খ্রিস্টানদের বিয়ে সম্পাদিতহয়।খ্রিস্টান বিয়ে একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠান এবং একটি পবিত্র চুক্তি।
খ্রিস্টানবিয়েলিখিত মাধ্যমে সম্পাদিত হয় এবং রেজিষ্ট্রি বাধ্যতামূলকভাবে করতেহয়।খ্রিস্টান বিয়ে রেজিস্ট্রেশনের প্রয়োজনীয় ধাপগুলো হলো:
বিয়ের পাত্র-পাত্রীর পুরো নাম ও ডাক নাম এবং পেশা বা অবস্থা
পাত্র-পাত্রীর আবাসস্থল ও বাসস্থানের ঠিকানা
পাত্র-পাত্রী কতদিন ধরে ঐ এলাকায় বসবাস করছে তার প্রমাণ পত্র
বিয়ে সম্পাদনের চার্চ বা অন্যকোন স্থান
নোটিশ প্রাপ্তির পর চার্চের ধর্মযাজক নোটিশটি খোলা জায়গায় লাগিয়ে দেবেন। যাতে নোটিশটি সকলের নজরে আসে।
এভাবে নোটিশ কয়েক সপ্তাহ ঝোলানো থাকবে যাতে কারো কোনো আপত্তি থাকলে তিনি যেন আপত্তি করতে পারেন।
যদি কোন আপত্তি না পান তাহলে চার্চ প্রধান বিয়ের পক্ষগণের নিকট থেকে একটি ঘোষণা গ্রহণ করবেন।
এই ঘোষণাটি বিয়ের পক্ষগণ ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে হাজির হয়ে দিবেন যাতে থাকবে-
2) বিয়ের পাত্র-পাত্রীর মধ্যে জানামতে এমন কোন ঘনিষ্ট আত্মীয়তা বা রক্তের সম্পর্ক নেই যাতে তাদের বিয়েতে আইনসম্মত বাধা আছে।
3)বিবাহের পাত্র-পাত্রী দুজনেই আইন অনুযায়ী সাবালক।
এই ঘোষণা সম্পন্ন হওয়ার কমপক্ষে ৪ দিন পর চার্চের ধর্মযাজক বিয়ের আবেদনকারীকে একটি সার্টিফিকেট প্রদান করবেন।
সার্টিফিকেট জারির ২ মাসের মধ্যে বিয়ে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে।
ব্যাখ্যা:৪
একটি ইউনিয়নে ১ জন সরকারি বিয়ে রেজিষ্টার দায়িত্বপ্রাপ্ত থাকেন। এই রেজিষ্টার জেলা রেজিষ্টার এবং জেলা রেজিষ্টার চূড়ান্তভাবে
রেজিস্ট্রেশন মহাপরিচালকের অধীনে ও তত্ত্বাবধানে দায়িত্ব পালন করে থাকেন।
ব্যাখ্যা:৫
রোমানক্যাথলিকধর্মযাজক, চার্চ অব ইংল্যান্ড অথবা চার্চ অব স্কটল্যান্ড এর কোনযাজক, নির্বাচিত কোন বিশপ, খ্রিস্টান ম্যারেজ এ্যাক্ট ১৮৭২ এর আওতায়লাইসেন্সপ্রাপ্ত কোন মিনিষ্টার অব রিলিজিয়ন অথবা উক্ত এ্যাক্টেরআওতায়নিযুক্ত কোন বিবাহ রেজিষ্টার খ্রিস্টান বিবাহ সম্পাদন ও করতে পারেন।
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস